× প্রচ্ছদ ঈশ্বরদী পাবনা জাতীয় রাজনীতি আন্তর্জাতিক শিক্ষাজ্ঞন বিনোদন খেলাধূলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্বাচন কলাম
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঈশ্বরদী খেলা প্রযুক্তি বিনোদন শিক্ষা



সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ২২-২৩ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে আলু

জয়পুরহাটে হিমাগার ও স্থানীয় বাজারে আবার আলুর দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রকারভেদে ২২-২৩ টাকা বেশিতে কিনতে হচ্ছে আলু। হিমাগারে পর্যাপ্ত আলু মজুত থাকার পরও প্রতিদিন কেন দাম বাড়ছে- সেই প্রশ্ন সাধারণ ভোক্তাদের। অভিযোগ উঠেছে, বাজার তদারকির অভাবে আলুর দাম বেড়েছে। তবে হিমাগার মালিকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের ভাষ্য, এবার উৎপাদন কম হওয়ায় হিমাগারে কাঙ্ক্ষিত আলুর মজুত হয়নি। অধিকাংশ হিমাগার অনেকটা ফাঁকা। চাহিদামতো আলু সংরক্ষণ না থাকায় কদিন পর বাজারদর কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে তারাও শঙ্কিত। এদিকে সরকার নির্ধারিত আলুর দাম বাস্তবায়নে বেকায়দায় পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বাধ্য হয়ে এক সপ্তাহ ধরে হিমাগারে গিয়ে সংরক্ষিত আলুর মালিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তালিকার কাজ শুরু করা হচ্ছে। তালিকায় আলুর মালিকের নাম, ঠিকানা, হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর পরিমাণ, প্রকার, দরসহ নানা বিষয় উল্লেখ করা হচ্ছে। তবে এ তথ্য দিতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন মালিকরা। অনেকেই তথ্য না দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ভোক্তাদের অভিযোগ, মৌসুম যেতে না যেতেই আলুর দাম বাড়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই সময়ে আলুর কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা থাকার কথা। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। কয়েকদিন আগে সরকার প্রতি কেজি আলুর দাম নির্ধারণ করে দেয় ২৯ টাকা। কিন্তু এমন নির্দেশনা কেউই মানছেন না। শনিবার হিমাগার ও স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৬ টাকায়। ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। দেশীয় লাল পাকরি ছোট আলুর কেজি ৬০-৬৫ টাকা। গত ১৫ দিনে খুচরা বাজারে কেজিতে দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এবার জয়পুরহাটে ৩৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ হয়েছিল। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৮৫০ টন। অপরিপক্ব আলু বিক্রি করায় এবার উৎপাদন ৮ লাখ ২৩ হাজার ১৩ টন হয়েছে। শুধু অপরিপক্ব আলু উত্তোলনই নয়, রোপণ মৌসুমে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী খাবার আলু বীজ হিসেবে বিক্রি করায় এবার উৎপাদন কম। জেলায় ১৯টি হিমাগারে আলু সংরক্ষণ ক্ষমতা ১ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টন। গত বছরের তুলনায় এবার সংরক্ষণ অনেকটাই কম। ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ বলেন, সংরক্ষণ করতে গিয়ে যেখানে এক কেজি আলুতে সব মিলে নির্ধারিত দাম পড়েছে ৩৫-৩৬ টাকা, সেখানে সরকার ২৯ টাকা কেজি নির্ধারণ করে কীভাবে? বৃহত্তর বগুড়া জেলা কোল্ড স্টোরেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, মৌসুম শুরুর আগে থেকেই বাজারে দাম বেশি থাকায় কৃষকরা এবার অপরিপক্ব আলু বিক্রি করেছেন। আলু সংকটে হিমাগারগুলোরও অনেক অংশ ফাঁকা পড়ে আছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রতন কুমার রায় বলেন, আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে কৃষি বিপণনসহ বিভিন্ন দপ্তর নিয়মিত তদারকি করছে। হিমাগারে আলু সংরক্ষণকারী ব্যবসায়ীদের তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাহেলা পারভিন জানান, প্রথম থেকে বেশি দাম পেয়ে অপরিপক্ব আলু তোলায় এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। সংরক্ষণ না হলে আলুর সংকট হতেই পারে। এবার রপ্তানি বাণিজ্যেও এর প্রভাব পড়েছে।

No comments