পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর কান ফাটালেন প্রধান শিক্ষক
থাপ্পড় মেরে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর কান ফাটানো এবং ক্লাসের সব শিক্ষার্থীকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে যশোরের চৌগাছার মালিগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে।
প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার (৩১ জানুয়ারি) ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
এরআগে রোববার (২৯ জানুয়ারি) যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের মালিগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
পাশাপোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় মারপিট ও অশোভন আচরণ করা এমনকী অভিভাবকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, রোববার শ্রেণিকক্ষের বাইরে যাওয়ায় পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর কানে চড় মারেন ও অশ্লীল গালিগালাজ করেন প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমান। এতে ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্কুলের পাশের বাজারে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এসময় ‘অন্য শিক্ষার্থীরা কেন শ্রেণিকক্ষের বাইরে গেল’ এ অভিযোগ তুলে তাদের মারপিট করেন। পরে অভিভাবকরা আমার কাছে এসে অভিযোগ করলে আমি ফোনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে (টিও) বিষয়টি জানাই। এরপর তিনি স্কুলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমান তার স্কুলের অন্য শিক্ষকদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে। এরআগে এক নারী সহকর্মীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগও করা হয়। সেসময় আর এমন করবেন না বলে তিনি ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পান।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থী জানিয়েছে, সে আগের চেয়ে কানে কম শুনছে। অন্য শিক্ষার্থীরাও তাদের মারপিটের বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়। প্রধান শিক্ষকও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোনে জানানো হলে তিনি এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন। নির্দেশনার আলোকে সোমবার দুপুরে লিখিতভাবে প্রতিবেদন আকারে বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments