পটুয়াখালীতে রোগীদের হয়রানির অভিযোগে ১১ বিক্রয় প্রতিনিধির দণ্ড
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (পমেক) সেবা নিতে আসা রোগীদের হয়রানির অভিযোগে ওষুধ কোম্পানির ১১ প্রতিনিধিকে জেল-জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগটি প্রশংসনীয় হলেও আন্দোলন করছে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। তারা জেলায় ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির ১১ প্রতিনিধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেলা প্রশাসনের এমন অভিযানের পরপর সহকর্মীদের মুক্তির দাবিতে গোটা জেলায় ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন বিক্রয় প্রতিনিধিরা। মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান করে বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
পটুয়াখালী ফার্মাসিটিক্যাল রিপ্রেজেন্টটিভ অ্যাসোসিয়েশনের (ফারিয়া) সভাপতি রকিবুল হাসান বলেন, বিনা অপরাধে মঙ্গলবার দুপুরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে ১১ বিক্রয় প্রতিনিধিকে ৭ দিনের কারাদণ্ড এবং ৫০০ টাকা জরিমানা করেছেন জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল কাইয়ূম, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানির সামিল।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, ইতোপূর্বে প্রতি রোববার ও বুধবার পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারদের ভিজিটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পটুয়াখালী ফার্মাসিটিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশন (ফারিয়া)। কিছুদিন এমন অবস্থা চললেও ওষুধ কোম্পানির চাপে সে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয় প্রতিনিধিরা। ওষুধ বিক্রি ও ডাক্তারদের দেওয়া ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলার টার্গেট বেধে দেয় কোম্পানিগুলো। ব্যর্থ হলে চাকরিচ্যুতসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাদের বিরুদ্ধে।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি-সেবা নিতে আসা রোগীদের কাছ থেকে জোর করে ব্যবস্থাপত্র ছিনিয়ে নিয়ে ছবি তুলছেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা নারী-পুরুষ মানছেন না। যা নিয়ে রোগী ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি লেগেই থাকে। এছাড়াও চিকিৎসকে অন্যায়ভাবে ব্যবস্থাপত্র লিখতে প্রভাবিত করেন কোম্পানিগুলো। ফলে রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
অভিযান প্রসঙ্গে পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ, পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর, পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোসা. সেলিনা আক্তার ও সুশীল সমাজের একাধিক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই এসব ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির হাতে নানাভাবে রোগীরা হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন। যা নিয়ে ভুক্তভোগীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু সঙ্গত কারণে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হয় না। জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
Advertisement (sandha)
Advertisement (pabna sweet)
Advertisement (school)
No comments