× প্রচ্ছদ ঈশ্বরদী পাবনা জাতীয় রাজনীতি আন্তর্জাতিক শিক্ষাজ্ঞন বিনোদন খেলাধূলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্বাচন কলাম
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঈশ্বরদী খেলা প্রযুক্তি বিনোদন শিক্ষা



দিনের ১২ অভ্যাস যা আপনাকে সুস্থ রাখবে মন থাকবে ভালো

দৈনন্দিন যাপনে কিছু নিয়ম নীতি পালন অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে শারিরিক সুস্থতার জন্য বেশ কিছু নিয়ম মানতে স্বাস্থ্যবিদরা আমাদের তাগিদ দেন। এরপরও আমাদের অনেকেই শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে ঔদাসীন্য দেখায়; যার খেসারতও দিতে হয়। দৈনিক রুটিনে আমরা অনেক ভুল করি; যেগুলো আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। তবে ছোটখাটো কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের পরিবর্তনই বদলে দেবে আপনার যাপন। প্রতিদিনের জীবনকে আরো স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর করতে এমন ১২টি অভ্যাস এখানে তুলে ধরা হলো— ০১. সকালে ঘুম থেকে উঠা প্রথম কথাটা শুনতে খুবই সাধারণ মনে হলেও এর মাহাত্ম্য চার শব্দের এক লাইনের চেয়েও বেশি। প্রতিদিন সকালে সূর্যের সাথে ঘুম উঠে আপনার দিনটা হয়তো সূর্যের সাথে সাথে আলোকিত করার দরকার নেই। তবে আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্ক সবসময় সার্কাডিয়ান ছন্দ অনুসরণ করার জন্যেই বিকশিত হয়। যেটা মূলত সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোয়ের মতই আমাদের ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে উঠার ধরণ নিয়ন্ত্রণ করে। এটা প্রাকৃতিক ভাবেই নিয়ন্ত্রিত ছন্দের মত কাজ করে যেটা আমাদের দেহের পাক যন্ত্র, ইমিউনিটি সিস্টেম, স্ট্রেস প্রতিক্রিয়া এবং শক্তি স্তরে ভূমিকা পালন করে। ঘুমানোর ২-৩ ঘণ্টা পর মানবদেহের কর্টিসলের (এক প্রকার স্টেরয়েড হরমোন) মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে যেটা মূলত ভোরে ঘুম থেকে উঠার জন্য আমাদের সাহায্য করে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার দিকে কর্টিসলের মাত্রা সর্বোচ্চ হয়। দিন যত বাড়তে থাকে এর মাত্রা তত হ্রাস পেতে থাকে। তাই শরীরের প্রাকৃতিক সার্কাডিয়ান ছন্দ এবং কর্টিসল স্তরগুলি অনুসরণ করা শক্তির মাত্রা, উত্পাদনশীলতা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে সর্বাধিক করার একটি সহজ উপায়। ০২. সকালে ঘুম থেকে উঠেই পানি পানের মাধ্যমে শুরু করুন হাইড্রেটেড থাকা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক। কথাটি যদিও আমরা অনেকবার শুনেছি তবুও আমরা বিষয়টি প্রায়শই উপেক্ষা করে যাই। আমাদের দেহের ৬০ ভাগ জল এবং পর্যাপ্ত জল পান না করলে ডিহাইড্রেশনের চেয়েও বেশি কিছু হতে পারে। যদিও সারাদিনে পর্যাপ্ত পানি পান করা অপরিহার্য। তবে সকালের শুরুটা পানি পান করার মাধ্যমে করাটাই দেহের জন্য সবথেকে উপকারী। এই অভ্যাস আপনাকে কেবল সতেজই নয় একই সাথে হজম এবং বিপাকের সময় শরীরকে হাইড্রেট করতে সহায়তা করে। ০৩. নিয়মিত নিজেকে সচল রাখার পেছনে পরিশ্রম ও সময় দিন মানুষকে নড়াচড়া করার জন্যই ডিজাইন করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের জীবনযাপন এতটাই সহজ করে ফেলেছি যে— আমরা শারীরকে সম্পুর্ন বিশ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছি। বেশিরভাগ ব্যক্তিই এখন সব কাজ শুয়ে বসেই সেরে ফেলেন। আমাদের সেই দিনগুলি চলে গেছে— যেখানে দৈনন্দিন জীবনে কায়িক শ্রম অন্তর্ভুক্ত ছিল। আমাদের নিয়ম মেনে প্রতিদিন শারীরিক কিছু ব্যায়াম করাটা অত্যাবশ্যক। সেটা হতে পারে সাইক্লিং করা, সাতার কাটা, সকালে হাঁটা অথবা জিমে যাওয়া। যেটাতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সেটাই প্রতিদিন করা উচিত সুস্থতার জন্য। ০৪. ঘরে বন্দি না থেকে দিনের কিছু সময় বাইরে কাটান নিয়মিত তাজা বাতাস পাওয়া আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির অন্যতম সহজ উপায়। সূর্যের এক্সপোজার শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি ক্লান্তি, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হাড় ও পিঠে ব্যথা, মেজাজ এবং বিষণ্নতার সঙ্গে যুক্ত। মজার ব্যাপ্যার হলো— ভিটামিন ডি সবচেয়ে সাধারণ পরিপূরক ভিটামিনগুলির মধ্যে একটি। যেখানে প্রতিদিন সূর্যের সংস্পর্শে আসা এই উদ্বেগের একটি সহজ সমাধান হতে পারে। বসন্ত, গ্রীষ্ম, শীত বা শরৎ যেই ঋতুই হোক না কেন নিশ্চিত করুন যে সতেজ বাতাস আর সূর্যের আলো পেতে আপনি প্রতিদিন কিছু সময় প্রকৃতির সান্নিধ্যে কাটাচ্ছেন। ০৫ যেকোনো খাবার বসে খাওয়ার অভ্যাস করুন আমরা অনেক সময় দাঁড়িয়েই অনেক খাবার খেয়ে ফেলি। যেটা শরীরের জন্য অস্বাস্থ্যকর। তাই যেকোনো খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হলে বসে খাওয়াই উত্তম। বসে বসে খাওয়ার বিষয়টি হজমে অনেক বেশি সাহায্য করে। কারণ বসে খেলে আমরা খাবারটা সময় নিয়ে চিবিয়ে খাই। ০৬. প্রতিদিন হাঁটতে যান হাঁটা এমন একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যা আপনি চাইলেই প্রতিদিন করতে পারেন। হাঁটা প্রায়ই উপেক্ষা করা হয় কারণ এটি খুব সহজ বা ‘অনেক ক্যালোরি পোড়ায় না’ এই ধারণার জন্য। হাঁটা শুধুমাত্র ফিটনেস, কার্ডিওভাসকুলার মার্কারগুলিকে উন্নত এবং ওজন বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে না। তবে এটি অঙ্গবিন্যাস, মেজাজ, সঞ্চালন, দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি, সেইসাথে ক্লান্তি এবং বিষণ্নতা দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন হাঁটতে যাওয়া, দীর্ঘ বা সংক্ষিপ্ত সময় বাইরে ব্যয় করা এবং সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে যা শরীরের ভিটামিন ডি এবং প্রাকৃতিক সার্কাডিয়ান ছন্দের উৎপাদনকে আরও সমর্থন করে। ০৭. রান্নার পেছনে সময় দিন রান্না জানা এমন একটি গুণ যেটা আপনার নিজেকে সুস্থ রাখতে অনেক বেশি সহায়তা করে। এর মাধ্যমেই আপনি আপনার শরীর ও স্বাস্থ্যেকে সেরা জিনিশ উপহার দিতে পারেন। রান্নাকে কাজ হিসেবে ভাবা হলেও মূলত এটি একটি মৌলিক মানবিক দক্ষতা যেটা আপনার নিত্যকার মৌলিক চাহিদা পূরণে সাহায্য করে এবং তা খুবই প্রয়োজন। রান্না হলো স্বযত্নের একটি সহজ উপায় যেটা নিয়মিত করতে পারেন। পাশাপাশি দৈনন্দিন স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গুলোর মধ্যে একটি। ০৮. প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শাক-সবজি যুক্ত করুন শাক সবজির গুরুত্ব এর নামের চাইতেও বেশি শুনতে যতটানা সস্তা মনে হয়। কারণ শাকসবজি শুধু সম্পূর্ণ খাবারই নয় এগুলো প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের আধার। এই উপাদান গুলো পাচক তন্ত্রের নিয়মিত ক্রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর এবং হজম সংক্রান্ত সমস্যায় সাহায্য করে। মেডিক্যাল সাইন্সের মতে প্রতিদিন শাক সবজি খাওয়া ব্যক্তিদের করোনারি হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি ২০ শতাংশ কম। ০৯. স্মার্ট গ্যাজেট (ফোন/ট্যাবলেট/পিসি) থেকে দূরে থাকুন বর্তমানে আমরা স্মার্ট গ্যাজেট যেমন ফোন, ট্যাবলেট বা কম্পিউটার থেকে দূরে থাকার কথা যেন চিন্তাই করতে পারি না। ২৪/৭ এসব যন্ত্রের সাথে যুক্ত থাকা আমাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আজকাল প্রত্যেকেরই একাধিক সোশাল মিডিয়া একাউন্ট রয়েছে। সেগুলাতে প্রতিদিন কম করে হলেও অনেক ঘন্টা সময় ব্যয় করে ফেলি। নীল আলোর ধ্রুবক এক্সপোজার দেহের প্রাকৃতিক মেলাটোনিন উৎপাদন দমন করে ফেলে যেটা আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক সার্কাডিয়ান ছন্দের এবং সময়মত ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয়। তাই ভোরবেলা পর্যন্ত ওয়েবে ঘোরাঘুরি করার পরিবর্তে, ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে আপনার ফোনটি বন্ধ করুন এবং ডিজিটাল স্ট্রেস ছাড়াই নিজেকে আরাম ও শান্ত হতে দিন। ১০. পরিষ্কার রান্নাঘর দিয়ে দিন শেষ করুন আপনি সচেতন হোন বা না হোন, আমরা যে স্থানটিতে বাস করি তা আমাদের আচরণের উপর তার একটি বড় প্রভাব ফেলে। একটি নোংরা বেডরুম, বিশৃঙ্খল বসার ঘর এবং নোংরা রান্নাঘর আমাদের মানসিক অবস্থা এবং আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
পরিষ্কার পরিবেশে থাকা আমাদের হতাশা হ্রাস করে, দক্ষতা উন্নত করে এবং আরও পরিবর্তনের জন্য একটি অনুঘটক হিসেবেও কাজ করতে পারে। তাই রাতে খাবারের পরে সাথে সাথে থালা বাসনগুলি পরিষ্কার করুন এবং সেগুলো গুছিয়ে রাখুন। পরিষ্কার রান্নাঘর রেখে ঘুমাতে যাওয়া আপনাকে পরদিন সকালে গতকালের জগাখিচুড়ির সাথে মোকাবিলা না করেই নতুন করে দিন শুরু করতে সাহায্য করে। ১২. প্রতিদিন অল্প করে হলেও বই পড়ুন বই পড়া আপনার শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং সেই সুবিধাগুলি সারাজীবন স্থায়ী হতে পারে। পড়া শুধু শারীরিক বৃদ্ধিকে উদ্দীপিতই করে না বরং এটি মানসিক চাপ কমাতে, বয়স-সম্পর্কিত জ্ঞানের পতন রোধ করতে এবং রাতে ভালো ঘুম এনে দিতে পারে। বইপড়া আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ওয়ার্কআউট। আপনি যেভাবে আপনার শরীরের যত্ন নেন তেমনভাবে আপনার মস্তিষ্কের যত্ন নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। ১২. তাড়াতাড়ি বিছানায় যান ঘুম হলো একমাত্র সময় যেখানে আমাদের শরীর শিথিল, বিশ্রাম এবং পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। দুর্ভাগ্যবশত, অনেকেই প্রতি রাতে অপ্রয়োজনে জেগে থাকছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলছে। অনেকে আবার অন্যান্য কাজের জন্য শোয়ার সময় কমিয়ে দিচ্ছেন। টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ভিডিও গেম সহ নানা জায়গায় সময়টা বেশি যাচ্ছে যেটা কমিয়ে ঘুমের দিকে নিয়ে আসা উচিত। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব বা নিম্নমানের ঘুম, স্মৃতির সমস্যা, মেজাজ পরিবর্তন, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, পরিবর্তিত খাওয়ার আচরণ এবং বার্ধক্য বৃদ্ধির সাথে জড়িত। সঠিক ঘুমের অভাব ওজন কমাতে সহায়তা করে কারণ ঘুমের অভাব ইনসুলিন, লেপটিন, কর্টিসল এবং অন্যান্য হরমোনে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে দেখা গেছে, যা ওজনের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। তাই প্রতিরাতে ডিজিটাল ডিভাইসগুলি বন্ধ করুন, বই পড়ুন, আলো নিভিয়ে দিন এবং শান্ত চোখে বিছানায় যান। পরের দিনটা আপনার সুন্দর কাটবে। [স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট কেএওয়াই নিউট্রিশন ডট কম অবলম্বনে ফিচারটি প্রস্তুত করা হয়েছে]
Advertisement (sandha)
A
dvertisement (pabna sweet)
Advertisement (school)

No comments