× প্রচ্ছদ ঈশ্বরদী পাবনা জাতীয় রাজনীতি আন্তর্জাতিক শিক্ষাজ্ঞন বিনোদন খেলাধূলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্বাচন কলাম
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঈশ্বরদী খেলা প্রযুক্তি বিনোদন শিক্ষা



৪ আগস্ট থেকে আবারও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা

লঘুচাপের প্রভাবে গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপের প্রভাব কেটেছে, কমেছে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা। তাই বৃষ্টির প্রবণতাও কমে গেছে। তবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে তা আগের দুই দিনের তুলনায় কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ৪ আগস্ট থেকে আবারও বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফদতর। এ কারণে দেশের নদী বন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এদিকে সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। কক্সবাজার জুড়ে পানি থৈ থৈ অবস্থা। চকরিয়ায় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্রায় দুইশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অন্যদিকে টানা বর্ষণে শুধু বাগেরহাটেই সাড়ে ৫ কোটি টাকার ফসলি ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে দেশের অনেক এলাকায় বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। তবে আগের দুই দিনের তুলনায় আজ বৃষ্টি কম হবে। আগামী ৪ আগস্টের পর বৃষ্টি বাড়বে। নদী বন্দরগুলোতে আগের মতোই সতর্ক সংকেত রাখা হয়েছে।’ আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে উত্তর প্রদেশ ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।Advertisement
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, সৃষ্ট লঘুচাপটি ভারতের উত্তর প্রদেশ ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে। লঘুচাপের প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং সিলেট বরিশাল, ঢাকা, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। গতকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সন্দ্বীপে ৯৫ মিলিমিটার। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকায় ৪, চট্টগ্রামে ১০, সিলেটে ১৪, রংপুরে ১৪, খুলনায় ২২ মিলিমিটার এবং রাজশাহী ও বরিশালে সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। Advertisement
নদী বন্দরগুলোর জন্য এক সতর্কবার্তায় বলা হয়— পাবনা, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারিপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিকে দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এজন্য এসব এলাকার বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর অবস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাগেরহাটে সাড়ে ৫ কোটি টাকার ফসলি ক্ষতি Advertisement
বাগেরহাটে টানা চার দিনের বৃষ্টিতে ফসলি জমি, বীজতলা, আমন ধান, সবজি, পানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনও পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে রোপা আমনের বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। টাকার অংকে চাষিদের পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ তিন হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২৭-৩০ তারিখ পর্যন্ত ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে জেলায় এক হাজার ৫৮৮ হেক্টর রোপা আমনের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। ৯৬০ হেক্টর জমির আউশ ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে ৩৭৯ হেক্টর জমির। সাড়ে ১০ হেক্টর জমির পান বরাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ২০ হাজার ২০৩ জন কৃষকের পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ তিন হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। গতকাল রোববার দুুপুর এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শরণখোলা, রামপাল ও মোংলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমি ও আমন ধানের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। কবে নাগাদ পানি নেমে মাঠঘাট আগের জায়গায় ফিরে আসবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। চিন্তার ছাপ ধান চাষিদের কপালে। শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামান মিলন বলেন, টানা বৃষ্টিতে এই উপজেলার শতভাগ মৎস্য ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। আমনের বীজতলা এখনও পানির নিচে রয়েছে। রবিশস্য ও গ্রীষ্মকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সাধারণ মানুষের দাবি অনুযায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া বেড়িবাঁধে পর্যাপ্ত স্লুইস গেট না থাকায় সহজে পানি নামতে পারে না। যার ফলে বৃষ্টির পানি স্বাভাবিকের থেকে বেশি সময় থাকে। বেড়িবাঁধে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্লুইস গেট নির্মাণসহ কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ টানা চার দিনের বৃষ্টিতে আমাদের বেশকিছু আমনের বীজতলা, পানের বরজ, আউশধান, আমন ধান ও গ্রীষ্মকালীন সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার প্রাথমিকভাবে যে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করেছি তাতে টাকার অংকে কৃষকদের অন্তত পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছি। কৃষকরা যাতে এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারে সেজন্য কৃষি বিভাগ তাদের পাশে রয়েছে।Advertisement
চকরিয়ায় প্রায় দুশ’ গ্রাম প্লাবিত ভারী বর্ষণে ও মাতামুহুরী নদী বেয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব গ্রামের লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিতে ডুবে মারা গেছে এক শিশু। গত বুধবার বিকেল থেকে পৌর এলাকার গ্রামগুলো প্লাবিত হতে শুরু করে। জোয়ারের সময় পানি আরও বেড়ে যাচ্ছে। এর বাইরে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের আরও ১৬০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, চকরিয়া পৌরসভার পূর্ব, উত্তর ও পশ্চিমে মাতামুহুরী নদী রয়েছে। সেখানকার ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধে মাটি ও বালুর বস্তা দেওয়া হয়েছে। যারা রান্না করতে পারছেন না, তাদের ঘরে খাবার পাঠানো হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে ১০ টন চাল, ১৫ বস্তা করে চিড়া ও গুড় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

No comments